শ্রীশ্রীঠাকুরের স্মরণীয় কিছু উপদেশ

সংসারে চলার পথে কোন বাঁধা-ধরা নিয়ম বা আদেশ শ্রীশ্রী ঠাকুরের নিকট হইতে কেহ কোনদিন পান নাই। সর্ব্বদা আলোচনার মাধ্যমে অনেক উপদেশ তিনি দিতেন। সেই সংগৃহীত উপদেশগুলিই জীবনপথে চলার একমাত্র অবলম্বন। কোন কঠিন সমস্যায় চিন্তান্বিত হইয়া পড়িলে ঠাকুর গল্পচ্ছলে উপদেশ দিয়া চিন্তা দূর করিয়া দিতেন। অধিকাংশ উপদেশ গল্প হইতে লওয়া হইয়াছে। উপদেশগুলি নিম্নে উদ্ধৃত হইল।

“ধর্ম্ম”

স্বভাবধর্ম্ম তথা কৈবল্যধর্ম্ম পৃথিবীর লোকের ধর্ম্ম হইবে। পাহাড়তলী কৈবল্যধামে সর্বধর্ম্ম-সমন্বয় হইবে। সর্বধর্ম্মাবলম্বী সাধকেরা একত্রে এখানে সাধনা করিবেন। কালে কোন মহাপুরুষ আসিয়া কৈবল্যধামের মাহাত্ম ও কৈবল্যধর্ম্ম সমস্ত পৃথিবীতে প্রচার করিবেন।

“গুরু”

» গুরুকে ভজনা বা পূজা করিলে সর্ব্বদেবতাকে পূজা করা হয় ও সর্ব্বদেবতা তুষ্ট হন।

» গুরুর আশ্রয় লইয়া সর্ব্বদা থাকিতে হয়।

» গুরুর কার্য্য সমালোচনা করার ক্ষমতা কাহারও নাই।

» গুরু ও ‘নাম’-এ কোন প্রভেদ নাই।

» গুরুর আদেশই একমাত্র আদেশ।

» গুরু সর্ব্বজ্ঞ ও সর্ব্বদর্শী।

» গুরু-তীর্থ কৈবল্যধামে গ্রমন ও কামশ্রীকুণ্ডতে স্নান করিলেই সর্ব্বতীর্থের ফল লাভ হয়।

» গুরু-কৃপায় সবই লাভ হয়।

» গুরুর আদেশ গুরুই দেন-অন্যে তাহা দিতেই পারেন না।

» গুরুর আশ্রিত ব্যক্তিকে পাপ স্পর্শ করিতে পারে না।

» গুরু পাত্রানুযায়ী বীজ বপন করেন।

» গুরুর বীজ নিস্ফল হয় না।

» গুরু-পদ সেবা অর্থে গুরুর আশ্রয় ভিক্ষা।

» গুরুর পূজায় শুচি-অশুচি নাই।

» প্রত্যেক অনু-পরমানু গুরুরই অংশ।

“নাম”

» প্রত্যেকের নাম গ্রহণ করা উচিত।

» নামই একমাত্র সংসারীকে মুক্তিদান করিতে পারে।

» শ্রীশ্রী ঠাকুর প্রদত্ত এবং পরে মোহন্ত পরস্পরায় বিতরণ করা “নাম” সবই এক।

» নামই মনকে স্থির করিতে পারে।

» নাম ও ভক্তিতে পূজা হয়।

“উপবাস ও উপদেশ”

» উপ শব্দের অর্থ নিকট। বাস মানে থাকা, উপবাস অর্থে যাঁহার উদ্দেশ্যে উপবাস তাঁহার ধ্যান ও সঙ্গ বুঝায়। উপ = নিকট + দেশ = আশ্রয়। উপদেশ অর্থে আশ্রয়ে থাকা।

“সাধুসঙ্গ”

» জগতের সমস্তই নশ্বর। একমাত্র প্রাণবায়ুই সৎ। প্রাণবায়ুই সৎ। প্রাণবায়ুর সঙ্গ করার নাম সাধুসঙ্গ বা সত্সঙ্গ।

“স্মরণীয় উপদেশ”

» সংসারী হইয়া সাধনা করিলেই মুক্তিলাভ হয়। সন্যাস গ্রহনের প্রয়োজন হয় না।

» সংসারীকে সামাজিক নিয়ম পালন করিতে হইবে।

» সংসারীকে পরিবার প্রতিপালন করিতে হইবে।

» যাহার যাহা আছে তাহাতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত।

» হিংসা করা উচিত নয়।

» মানুষ মানুষের অনিষ্ট করিতে পারে না।

» ভাগ্যের লিখন মানিতে হইবে।

» অতীত ও ভবিষ্যত চিন্তা করিয়া লাভ নাই।

» সঞ্চয় করিলে বন্ধন বাড়ে।

» কর্ত্তিত্বাভিমানী কোন কার্যে সাফল্য লাভ করিতে পারে না।

» সর্ব্বদা নিজেকে ছোট মনে করিয়া প্রচ্ছন্ন থাকিতে হয়।

» বাহ্য আবরণে অভিমান বাড়ায়।

» কাহারও মনে কষ্ট দিতে নাই।

» মাতাপিতার সেবা করিতেই হইবে।

» কাহাকেও তুচ্ছ জ্ঞান করিতে নাই – কাহার মধ্যে কি আছে তাহা জানা যায় না।

» সাধুর পোশাকে যিনিই থাকিবেন তিনিই নমস্য।

» কেহই জগতের অস্পৃশ্য নয়।

» তর্ক ও বিচারে কোন লাভ হয় না।

» পুঁথিগত বিদ্যা বিদ্যা নয়।

» সর্ব্বদা মাথা উঁচু করিয়া চলিবে।

» প্রত্যেকের দীক্ষা গ্রহণ করা উচিত।

» স্ত্রীকেও সর্ব্বদা সন্তুষ্ট রাখিতে হইবে।

» জোর করিয়া কোন অভ্যাস ত্যাগ করিয়া লাভ হয় না।

» যে নিজে আসে তাহাকে তাড়াইতে নাই।

» কর্ত্তব্য কার্য্য ত্যাগ করিয়া কোন উত্সব বা ধর্ম্মানুষ্ঠান যোগদান করিয়া লাভ হয় না।

» আমাদের চরম লক্ষ্য মুক্তি।

» শরীরের যত্ন করিতে হইবে।

» কোন জিনিষ প্রার্থনা করিতে নাই।

» ফুল বাসি হয় না।

» পাপীকে ঘৃনা করিতে নাই।

» প্রসাদ যখন যে অবস্থায় পাওয়া যায় তখনই গ্রহণ করিতে হইবে।

» উত্সব মনকে পবিত্র করে।

» সুখই দুঃখ আনে।

» দেবমন্দির কখনো অপবিত্র হয় না।

» প্রত্যুপ্রকারের আশায় উপকার করিতে নাই।

» এমন কোন অভ্যাস থাকা উচিত নয় যাহা ত্যাগ করা যায় না।

» এই পৃথিবী মর-ভূমি।

» মনের পাপ আত্মায় স্পর্শে না। আত্মা সর্ব্বদা নির্ম্মল।

» সাধু-সন্যাসীকে আহ্বান করিয়া গৃহে আনিলে গৃহীর পক্ষে সেবাযত্নের দ্বারা তাঁহাকে সন্তুষ্ট করা যায় না, অসন্তোষ উত্পাদনের কারণ হয়। আপন ইচ্ছায় আসিলে গৃহীর কোন দোষ-ত্রুটি তিনি গ্রহণ করেন না।

» ‘আমি’ বলিয়া পৃথিবীতে কেহ নাই। আমার কোন শক্তি নাই।

» ‘আমি’ যন্ত্রচালিত পুত্তলিকা মাত্র।

» কোন গন্ডির মধ্যে গেলে বন্ধনে পড়িতে হয়।

» স্ত্রীলোকের মুখ্যধর্ম্ম পতিসেবা।

ERROR: It had not been possible to open the file. Review your name and your permissions.