শ্রীশ্রীঠাকুরের আশ্রমমন্দির সমুহের মধ্যে কুমিল্লা, বাংলাদেশের শ্রীশ্রীরাসস্থলী প্রাচীনতম। কুমিল্লা নিবাসী শ্রীশ্রী ঠাকুরের চরনাশ্রিত ভক্ত ডাক্তার যতীন্দ্র চন্দ্র দেবরায়ের লেখনী জানায় যে ১৯৩৯ সালে কুমিল্লার ভক্তমন্ডলীর তরফে ডাঃ দেবরায় এবং যোগেশ চন্দ্র সেন শ্রীশ্রী ঠাকুরের চরণে প্রণাম করে একটি উৎসব করার অনুমতি প্রার্থনায় শ্রীশ্রী ঠাকুর সামান্য নীরবতা শেষে শ্রীমুখে জানান যে “কুমিল্লায় আপনারা রাসোৎসব করিবেন”। তথাপি কুমিল্লা টেকনিক্যাল স্কুল প্রাঙ্গনে শ্রীশ্রীরাসোৎসব প্রথম অনুষ্ঠিত হয় শ্রীশ্রীঠাকুরের আশির্বাদ ও কুমিল্লার ভক্তমন্ডলীর আন্তরিক উদ্যোগে। পরবর্তীকালে ১৯৪০ সন হইতে ১৯৫৭ সন পর্যন্ত ঐ রাসোৎসব কুমিল্লার কান্দির পাড়ে বসন্তকুমার মজুমদারের গৃহ প্রাঙ্গনে আয়োজিত হয়। জানা যায় কোনও একবার শ্রীশ্রীঠাকুর উৎসবের আগে ঐ উৎসব স্থানে তাঁর পদধুলি দিয়ে কুমিল্লার ভক্তমন্ডলীর ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন। পরবর্তীকালে কুমিল্লার বিখ্যাত আইনজীবি বিশ্বেশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র পরেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রাণীর বাজারের পূর্ব দিকের একটি জায়গা শ্রীশ্রীকৈবল্যধামের দ্বিতীয় মোহান্ত মহারাজ শ্রীমৎ শ্যামাচরন চট্টোপাধ্যায়কে দান করেন। তাঁরই অনুপ্রেরনায় জমিটির সংস্কার সাপেক্ষে ঐস্থানে রাসোৎসব’র স্থান নির্দ্দিষ্ট করবার জন্য কুমিল্লার ভক্তমন্ডলীকে নির্দেশ দেন এবং স্থানটির নামকরন করেন শ্রীশ্রীরাসস্থলী। পরবর্তীক্ষেত্রে মোহান্ত মহারাজের নির্দেশক্রমে এবং কুমিল্লার ভক্তমন্ডলীর আন্তরিক ইচ্ছা ও সহযোগীতায় শ্রীশ্রীরাসস্থলীতে তৈয়ার হয় শ্রীমন্দির সহ সুন্দর সুদৃশ্য মোহান্ত নিবাস ও যাত্রী নিবাস। ১৯৫৮ সন হইতে প্রতিবছর রাসপূর্ণিমায় শ্রীশ্রীরাসস্থলীতে আনন্দ ও মহাধুমধামের সহিত পালিত হয়ে আসছে শ্রীশ্রীরাসোৎসব। প্রথম বছর শ্রীশ্রী কৈবল্যধামের দ্বিতীয় মোহন্ত মহারাজ শ্রীমৎ শ্যামাচরন চট্টোপাধ্যায় নিজে ঐ রাসোৎসব পরিচালনা করেছিলেন এবং কুমিল্লার ভক্তদের আশীর্বাদ দানে ধন্য করেছিলেন।