স্তুতিঃ
যন্ময়া ভক্তিযোগেন পত্রং পুষ্পং ফলং জলম্।
নিবেদিতঞ্চ নৈবেদ্যং তদ্গৃহাণানুকম্পয়া ।।
ত্বদীয়ং বস্তু গোবিন্দ তুভ্যমেব সমর্পয়ে।
গৃহাণ সুমুখো ভুত্বা প্রসীদ পুরুষোত্তম।।
মন্ত্রহীনং ক্রিয়াহীনং ভক্তিহীনং জনার্দ্দন।
যৎ পূজিতং ময়া দেব পরিপূর্ণং তদস্তু মে।।
অমোঘং পুণ্ডরীকাক্ষং নৃসিংহং দৈত্যসূদনম্।
হৃষীকেশং জগন্নাথং, বাগীশং বরদায়কম্।।
সগুণঞ্চ গুণাতীতং, গোবিন্দং গরুড়ধ্বজম্।
জনার্দ্দনং জনানন্দং জানকীবল্লভং হরিম্।।
প্রণমানি সদা ভক্ত্যা নারায়ণমতঃপরম্।
দুর্গমে বিষমে ঘোরে, শত্রুণা পরিপীড়িতে।।
নিস্তারয়তু সর্ব্বেষু তথানিষ্টভয়েষু চ।
নামান্যেতানি সংকীর্ত্ত্য ঈপ্সিতং ফলমাপ্নুয়াৎ।।
সত্যনারায়ণং দেবং বন্দেঽহং কামদংপ্রভুম্।
লীলয়া বিততং বিশ্বং যেন তস্মৈ নমো নমঃ।।
-:পুষ্পাঞ্জলি:-
ওঁ নমস্তে বিশ্বরুপায়, শঙ্খচক্রধরায় চ।
পদ্মনাভায় দেবায়, হৃষিক-পতয়ে নমঃ।।
নমোহনন্তস্বরূপায়, ত্রিগুণাত্মবিভাসিনে।
এষ পুষ্পাঞ্জলিঃ ওঁ সত্যনারায়ণায় নমঃ।।
শ্রীশ্রী সত্যনারায়ণ-এর পাঁচালী
নমঃ সত্যনারায়ণায় নমঃ
সত্য সত্য সত্যপীর সর্ব্বসিদ্ধি দাতা।
বাঞ্ছা বড় বাড়িল বর্ণিতে ব্রতকথা।।
রসাল রসিক-প্রিয় রমাইব রাগে।
বৃন্দারক-বৃন্দকে বন্দনা করি আগে।।
গুরুগণ গণেশে করিয়া প্রণিপাত।
বন্দোঁ বহ্নি বিপ্র বিধি বিষ্ণু বিশ্বনাথ।।
ত্রিসাবিত্রী সিন্ধুপুত্রী সরস্বতী শিবা।
ত্রিসন্ধ্যা নক্ষত্র চন্দ্র সূর্য্য রাত্রি দিবা।।
কামাখ্যারে করি নতি ধর্ম্মরাজ-যুতা।
সসর্প মনসা বন্দোঁ মহেশের সুতা।।
অষ্ট সিদ্ধি নবগ্রহ দশদিক্পাল।
বন্দোঁ বর্ণ পঞ্চাশৎ পরম রসাল।।
প্রণমিব পরাৎপর পদাব্জযুগল।
কূর্ম্মানন্ত অবনী অম্বুধি অষ্টাচল।।
ত্রৈলোক্য তারিণী বন্দোঁ তুলসী-সুন্দরী।
গোলোক প্রভৃতি বন্দোঁ চতু্র্দ্দশ পুরী।।
গঙ্গা আদি তীর্থক্ষেত্রে হইয়া দণ্ডবৎ।
কামরূপ আদি বন্দোঁ পীঠ পঞ্চাশৎ।।
সায়ুধ-বাহন-আবরণ-পরিবার।
দশ মহাবিদ্যা বন্দোঁ দশ অবতার।।
গোকুলে গোবিন্দ বন্দোঁ গোবর্দ্ধন-ধারী।
প্রণমিব প্রভুর প্রেয়সী যত নারী।।
বলরাম আদি ব্রজ বালক সকল।
বৃন্দাবন-যমুনাদি বিহারের স্থল।।
গো গোপী গোপাল গুরু ব্রজবাসী যত।
রাধাকৃষ্ণ যুগলাদি সখী সখা শত।।
ষষ্ঠী মহাকাল ক্ষেত্রপাল আদি যত।
উপদেব-বৃন্দকে বন্দনা শত শত।।
নম্র হইয়া নবদ্বীপে বন্দিব নিমাই।
পতিতপাবন প্রভু আর কেহ নাই।।
বন্দোঁ বীরভদ্র ধীর নিত্যানন্দ রাম।
প্রেম ধন দান দিয়ে পূর্ণ কৈল কাম।।
প্রণমিব নদ নদী নদের নিমাই ।
বীরভদ্র নিত্যানন্দ শ্রীরূপ গোঁসাই ।।
অদ্বৈত আচার্য্য বন্দোঁ গদাধর পন্ডিত ।
বন্দিয়া শ্রীবাস আদি ভক্তগণ গীত ।।
বৈষ্ণব ব্রাহ্মণ যতী মােহান্তের গণ ।
যােগী ন্যাসী কর্মী জ্ঞানী গােস্বামী চরণ ।।
বিষ্ণু শৰ্ম্মা বিষ্ণুপ্রিয়া সত্যনারায়ণ ।
ভক্ত ভক্তি ভগবান্ তিন রূপ হন ।।
পতিতপাবন গুরু সত্যনারায়ণ ।
যাহার কৃপায় তরে এ তিন ভূবন ।।
ব্রহ্মাদ্যাদি সৰ্ব্বশক্তি পরা শক্তি দাত্রী ।
চন্ডচামুন্ডা চন্ডিকা দুর্গা শিবদূতী ।।
অপ্সরী কিন্নরী বন্দোঁ ডাকিনী যােগিনী ।
ছয় রাগ ছয় ঋতু ছত্রিশ রাগিনী ।।
বন্দো বেদ বেদাঙ্গ বেদান্ত বিদ্যাগণ ।
যত ব্ৰহ্ম ঋষি দেব মুনির চরণ ।।
অতঃপর বন্দিব রহিম রামরূপ ।
ত্রিদশের চতুর্দশ ভূবনের ভূপ ।।
কোরাণ কেতাব্ আর কলমা সংহতি ।
সুফি খাঁ পীরের পায় প্রচুর প্রণতি ।।
সাত শত আউলিয়া বন্দি কর জোড়ে ।
ফণীন্দ্র নগেন্দ্র ইন্দ্র কাপে যা’র ডরে ।।
পরে সত্যপীর বন্দোঁ বলে দ্বিজ রাম ।
সাকিন বরদা বাটী যদুপুর গ্রাম ।।
জয় জয় সত্যপীর, সনাতন দস্তগীড়,
দেব দেব জগতের নাথ ।
কে জানে তােমার তত্ত্ব, তুমি রজঃ তমঃ সত্ত্ব
তােমার চরণে প্রণিপাত
সৰ্ব্বভূতে সৰ্বময়, চারু চরাচরচয়,
চন্দ্রচূড় – চিন্ত্য চিন্তামণি ।
পূৰ্বে হয়ে দশমূৰ্ত্তি, করিলে অকথ্য কীর্তি,
সত্যপীর হইলে ইদানী ।।
ছয় দরশনে কয়, এক ব্ৰহ্ম দুই নয়,
জন্ম জন্য ভিন্ন ভিন্ন নাম ।।
কলিতে যবন দুষ্ট, হৈন্দবী করিল নষ্ট,
দেখিয়া রহিম হইলা রাম।
ভক্তের কারণে হরি, রহিমের বেশ ধরি,
দুষ্টে দেখি দূরে পরিহার ।।
ব্রাহ্মণে বলিয়া ভেদ, ঘুচালে মনের খেদ,
রক্ষা কৈলে সৃষ্টি আপনার ।।
এক মনে অল্প ধনে, যে তােমারে সির্ণি মানে,
হাসিল্ করহ তার কাম ।।
আমি অতি মূঢ় মতি কি জানি ভকতি স্তুতি,
নিজ গুণে পূর গুণধাম ।।
তােমার সেবাতে হয় হৃদয়ের গ্রন্থি ক্ষয়,
তােমা বিনা কিছু নাহি জানে ।
সদানন্দে হয়ে লীন তােমার প্রেমেরধীন,
পরাপর সেবাগত ধ্যানে ।।
দরিদ্র দ্বিজের কাছে, পূৰ্ব্বকালে সৰ্ত্ত আছে
আত্মবাক্য পালিবে আপনি ।
নায়কেরে হ’য়ে তুষ্টি সির্ণিতে করহ দৃষ্টি,
শুন আপনার ব্রত বাণী ।।
দুঃখ বিনাশিনী তথা, তােমার মঙ্গল কথা,
যে গায় গাওয়ায় কিংবা শােনে ।
তুমি রক্ষা কর তারে মহামারে মহাঘােরে
রণে, বনে, রিপু সন্নিধানে ।।
দৃঢ়ভক্তি হয় যার, পাতক না থাকে তার
মনােরথ সিদ্ধি হাতে হাতে ।
কহে দ্বিজ রামেশ্বর শুদ্ধভাবে শুন নর,
হরি বল পীরের পীরিতে ।।
সিৰ্ণি দিয়ে শুদ্ধ ভাবে, পূজিলে বাঞ্ছিত লভে
পুত্র, দারা, অর্থ, ঘােড়া, দোলা ।
ভনে দ্বিজ রামেশ্বর, বুঝে কাৰ্য্য কর নর,
শুন প্রভুর অষ্ট মঙ্গলা ।।
কলিতে প্রথম তত্ত্ব ফকিরত্ব কায়া ।
দ্বিতীয়ে দরিদ্র দ্বিজে দিলে পদ ছায়া ।।
তৃতীয়ে ত্রিবিধ লােক করিলে নিস্তার ।
চতুর্থে উৎকট কষ্ট নষ্ট কাঠুরার ।।
কন্যা জন্য মাননে পঞ্চমে পরাৎপর ।
সদানন্দ সাধুকে সংকটে দিলা বর ।।
পাসরণে প্রতিফল বন্ধন বিদেশে ।
যষ্ঠে তুষ্ট হয়ে কষ্ট দূর কৈলা শেষে ।।
সপ্তমে সাধুর সঙ্গে পথে দরশন ।
অষ্টমে অবলার অহংকার মােচন ।।
কত ঠাঁই ঠাকুরালী করিয়া প্রচুর ।
দরিদ্রের দুঃখ ক্লেশ কত কৈলা দূর ।।
বংশধ্বজ নৃপতির দর্প চূর্ণ করি ।
গােপগণ সঙ্গে পূজা করাইলা হরি ।।
পরে তুষ্ট হয়ে তারে দিলে পরম স্থান ।
সত্যনারায়ণ হন দয়ার নিদান ।।
পুত্ৰার্থীরে পুত্র দেয় ধনার্থীরে ধন ।
দয়াৰ্থী সদাই সেবে সত্যের চরণ ।।
তুমি প্রভু দয়াসিন্ধু মহিমা সাগর ।
কি বলিতে পারি প্রভু আমি তুচ্ছ নর ।।
আপনি রচিলে নাথ আপন কীৰ্ত্তন ।
মাের দোষ ক্ষম, দেহ চরণে শরণ ।।
নায়কে কল্যাণ কর গায়কে সুস্বর ।
আসর সহিতে সত্যপীর দেহ বর ।।
পূজার দক্ষিণা দিবে, না হবে কাতর ।
তবে দয়া করিবেন পীর পয়গম্বর ।।
গ্রন্থ সাঁঙ্গ হৈল বিরচিল দ্বিজ রাম ।
সবে হরি ধ্বনি কর মুজ্ রা সেলাম ।।
প্রণাম
অর্চ্চনং বন্দনং পাঠং নমস্কারং ক্ষমস্বতে ।
প্রসাদানন্দ সংযােগে স্তুতিং কৃত্বা গৃহং গত্বা ।।
গুণানুচিন্তয়েৎ ভক্ত্যা রাত্রৌ নিদ্রা ন লভ্যতে ।
এবং কৃতে মনুষ্যাণাং নিত্যানন্দং সুখং ভবেৎ।।