কৈবল্যধামের মাহাত্ম্য সম্বন্ধে শ্রীশ্রী ঠাকুর শ্রীমুখে ও পত্র লিখিয়া যাহা প্রকাশ করিয়াছেন তাহা প্রনিধান করিলে আনন্দে আত্মহারা হইতে হয়। ইহা আপনাদের অবিদিত না থাকিলেও তাঁহার শ্রীহস্ত লিখিত কয়েকখানা পত্রের কতক কতক অংশ নিম্নে উদ্ধৃত করা গেল।
. . . . . . . . . . ঐ আশ্রমে আমার প্রাণ, প্রাণের ঈশ্বর শ্রীসম্পদ ভগবানের স্বরূপ শক্তি শ্রীগুরুদেবের পরমানন্দ সাধ্য, আত্মশক্তি, তাহার স্বজন, স্বগন সহকারে সমস্ত ত্রিলোকাদি, বৈকুন্ঠ কৈলাসের আদর্শ শক্তি নিয়া, গয়া প্রভৃতি পুরোষোওমীয় শ্রীবৃন্দাবন প্রভৃতি যাবতীয় অধিষঠানীয় সময় বিশুদ্ধ শক্তিনিয়া নিত্য বিরাজ করিতেছেন। কৈবল্যশক্তিতে সিংহবাহিনী প্রভৃতি মহাদেবীর যত রকম বিভূতি আছে, সাবিত্রী প্রভৃতি সমস্ত শক্তি বিস্তার রূপে বিরাজমান রহিয়াছে। ঐ স্থানচ্যুত হইয়া একপদ কোথায় যায় না। গয়া প্রভৃতি বিষ্ণু পদাদিতে পিণ্ডদানে, গঙ্গা প্রভৃতি সমস্ত তীর্থে স্নানত্সবাদিতে যে সকল ফলশ্রুতি আছে, তাহার সমস্ত ফল ওখানে বাস, অবগাহন, পিণ্ডাদি দানে কি শুশ্রুষা দ্বারা পূর্ণরূপে ফলবতী হইবে।
. . . . . . . . . . আপনারা এই বাক্য বিশ্বাস করিয়া অনন্যমনে ভ্রমশূণ্য হইয়া ঐ কৈবল্য সম্ভারের অধিকারের নিত্য শুশ্রুষা করিয়া ধন্য হউক। ** ঐ আশ্রমে আমার প্রাণ রহিয়াছে জানিবেন। যাহাতে ঐ আশ্রমের নিয়মিত সেবা ও যাহানারা ওখানে উপস্থিত থাকিবেন তাহানদের যেন কোনরূপ অভাব না হয় ইহাই আপনাদের উপর ভার দিয়া, আপনাদের এই কৃপাপ্রাথী হইয়াছি। কালে কোন মহাজন দ্বারা ঐ আশ্রম মাহাত্ম প্রকাশ হইয়া এই ত্রিলোক ধ্বনিত হইয়া যাইবে।
. . . . . . . . . . নিগমচিত্তের প্রকাশক বলিয়া অনঙ্গমঞ্জরী স্বরুপা শ্রীগুরুদেব উদয় অনুদয় (অর্থাৎ মনেতে থাকেন কখন থাকেন কখন থাকেন না) কিন্তু আশ্রমে সর্ব্বদাই থাকেন এবং আসন ছেড়ে একটুও থাকেন না। ইহা তিনি স্বয়ং শ্রীমুখ নিঃসৃত বাক্য স্বয়ং বলিয়াছেন। ঐ কৈবল্যধাম কৈবল্যনাথ নাম অধিষ্ঠান হইয়া সাঙ্গ পাঙ্গ সহ নিত্য প্রতিষ্ঠান আছেন। পৃথিবীর যাবতীয় তীর্থের সারভূত ওখানে অধিষ্ঠান সর্ব্বদা থাকেন। এই জন্যই ঐ কৈবল্যধামকে পূর্ণস্বরূপ বলিয়া খ্যাত হইয়াছে। ওখানে যে কোন অবস্থায় যে কোন প্রাণী দেহত্যাগ করেন, কি বাস করেন, কি কোন উত্সব করেন, কি ভোগাদি মহোত্সব কির্ত্তণদি সম্বন্ধ করেন, তাহাই অক্ষয়রূপে পূর্ণ হইয়া কৈবল্য প্রাপ্ত হইবে ইহা তিনি স্বজনের নিকট নিজেই ব্যক্ত করিয়াছেন। অতএব যাহাতে আপনাদের ঐ কৈবল্যধামের প্রতি আশ্রয়াস্বরূপ হইয়া আশ্রম রাখিয়াছেন, সকল অভাব মোচন করিতে পারেন তাহা করিবেন। সর্বদা ঐ আশ্রমের প্রতি লক্ষ্য রাখিবেন। আমার এই প্রার্থনা।
. . . . . . . . . . তিনি শ্রীধাম বৃন্দাবনে গিয়াছেন। ইতিপূর্বে আপনাদের প্রতিষ্ঠা কৈবল্যধামে গিয়া বড়ই আনন্দ পাইয়া আসিয়াছিলেন। এমন কি ইহা ও বলিলেন তিনি যত তীর্থ ভ্রমন করিয়াছেন এমন স্থান কোথাও দেখেন নাই। এমন পবিত্র বোধ আর করেন নাই। ভগবানের কৃপায় আপনাদের তত্ত্বাবধানে ঐ কৈবল্যনাথ কৈবল্যই বিস্তার করিবেন সন্দেহ নাই। শ্রীগুরুদেব আপনা হইতেই কৈবল্যধামের প্রশংসা করিয়া করিয়া বহুরকম স্তুতি কলাপছলে কথ্গীত সাঙ্গপাঙ্গ সম্বলিতে কাশীতে করিয়াছেন। ইতিপূর্বে আমার হৃদয় হইতে যাহা যাহা কীর্তন স্ফুরণ হইয়াছিল সেই সকলি প্রকাশ হইয়াছে। সকল ভক্ত মন্ডলে আশীর্বাদ দিবেন।
. . . . . . . . . . কৈবল্যনাথ বলিতে গেলে কৈবল্য শক্তিকেও বলিতে হইবে। ইহাতে যে কোন দেবতারই অর্চ্চনা হউক না। সেই সেই দেবতার ঐ কৈবল্যনাথেরই হইবে। যে চিত্রপট আছে সেখানে মঙ্গলঘট বসাইয়া তাহারই নিকট যাহার যে বিধান বিধি আছে সেই বিধি দৃষ্টেই পূজা হইবে। ইহার মধ্যে সংশয় কি হইতে পারে। ঐ চিত্রপটেও দেবদেবীর অর্চ্চনা বিধিপূর্ব্বক করিলে হইতে পারে। বিধি বিধানে আছে ঘট পট হইতে পারে। মহাদেবীর ধ্যানদি সাঙ্গোপাঙ্গ সহিত যে পূজা বিধান আছে তাহা ঐ পটেও হয়। ঐ পটে যদি জীবের প্রাণীস্বত্ত্বার রূপ বলিয়া সংস্কার থাকে তাহা হইলে কৈবল্য অর্চ্চনা হইবে না। ঐপটকেও কৈবল্যই প্রকাশ জানিয়া উহার সমস্ত বিভূতি আর জগতে ত্রিধা বিকাশের দেবদেবী জানিবেন . . . . . . . . . . ।